চুল পাকা বন্ধের ঔষধ হোমিওপ্যাথি - চুল পাকে কোন ভিটামিনের অভাবে
আমাদের মধ্যে অনেক জনেরই অল্প বয়সে চুল পাকে। অল্প বয়সে চুল পাকলে চুল পাকা বন্ধের ঔষধ হোমিওপ্যাথি আছে। আর সেই জন্যই চুল পাকা বন্ধের ঔষধ হোমিওপ্যাথি নিয়ে আজকে লিখব। চুল পাকে কোন ভিটামিনের অভাবে ও চুল পাকা বন্ধের ঔষধ হোমিওপ্যাথি সম্পর্কে আমাদের সবার জানা উচিত। চলুন জেনে নি,
কি কি শিখব আজকের এই আর্টিকেল থেকে। আমরা জানবো চুল পাকা বন্ধের ঔষধ হোমিওপ্যাথি
সম্পর্কে, চুল পাকে কোন ভিটামিনের অভাবে, চুল পাকা বন্ধের হোমিওপ্যাথি ঔষধ খাওয়ার
নিয়ম, অল্প বয়সে চুল পাকার কারণ ও চুল পাকে কোন ভিটামিনের অভাবে।
চুল পাকা বন্ধের ঔষধ হোমিওপ্যাথি:
আমাদের শরীরে কিছু কিছু রোগের চিকিৎসা হোমিওপ্যাথি ঔষধ এ খুব ভালো কাজ করে।
হোমিওপ্যাথি ঔষধ এ খুব দ্রুত কিছু কিছু রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। সেই কিছু রোগ
গুলোর এর মধ্যে চুল পড়া ও একটি রোগ। যেইটার চিকিৎসা খুব দ্রুত করা যায়
হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা দ্বারা ।
আরো পড়ুন: ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ গুলো কি কি
চুল পড়া বন্ধের আরো অনেক উপায় বা চিকিৎসা রয়েছে। সবচেয়ে বেশী কার্যকারী চিকিৎসা
হলো হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা করা। তাহলে চলুন জেনে নি চুল পাকা বন্ধের ঔষধ
হোমিওপ্যাথি হিসেবে কি কি আছে,
- Acid Phosphoricum 200 CH
- Acid Phosps 200
- Thuja Occidentalis
- Babchi Oil
- Oasis
- Lycopodium 200
- Lycopodium 1000
- Lycopodium Clavatum 200 CH
- Jaborandi
- Arnica Montana
- Psoralea Corylifolia
চলুন জেনে নি চুল পাকা বন্ধের হোমিওপ্যাথি ঔষধগুলো কখন কোনটা কোন অবস্থায় খেতে হয়।
চুল পাকা বন্ধের হোমিওপ্যাথি ঔষধ খাওয়ার নিয়ম:
Acid Phosphoricum 200 CH: Acid Phosphoricum 200 CH অল্প বয়সে
চুল পাকার এটি সবচেয়ে কার্যকরী ওষুধ হিসেবে চিহ্নিত। যদি আপনার শরীরে বেশ কিছু
লক্ষণ দেখা দেয় যেমন শরীরের সব সময় ক্লান্তি অনুভব করা শরীর ঝিমঝিম করা
অপুষ্টিতে ভোগা তাহলে আপনাকে Acid Phosphoricum 200 CH এই ওষুধটি খেতে হবে। এটি খাওয়ার নিয়ম হল এই ওষুধটি যে কোনো
হোমিওপ্যাথি দোকান থেকে 30ml এর মতন কিনে নিবেন। এটি দিনে তিনবার ১৫ ফোঁটা করে
আধা গ্লাস পানিতে খাবারের ৩০ মিনিট আগে দিনে তিনবার খাবেন।
Acid Phosps 200: কোন হোমিওপ্যাথি দোকান থেকে Acid Phosps 200 এই
ওষুধটি 5ml কিনে নিবেন। একই দিনে দুবার জিহবার উপরে ৩ ফোটা করে দিয়ে খাবেন।
Thuja Occidentalis: এটিও দিনে দুবার করে খাবেন। জিহ্বার উপরে ৫
ফোটা করে দিয়ে সকালে ও বিকেলে খাবেন।
Babchi Oil: গোসল করার পূর্বে Babchi এই তেল টি মাথায় লাগিয়ে
রাখবেন। এটি মাথায় বেশিক্ষণ লাগিয়ে রাখবেন না এতে করে আপনার মাথা চুলকাতে
পারে। সেই জন্য গোসলের ৩০ মিনিট আগে Babchi এই তেল টি লাগিয়ে গোসল করে নিন।
Oasis: Oasis হলো একটু শ্যাম্পুর নাম। প্রতিদিন এই শ্যাম্পু দিয়ে
আপনাকে গোসল করতে হবে। এ শ্যাম্পু টি হোমিওপ্যাথি ওষুধের দোকানে আপনি পাবেন।
Lycopodium: অল্প বয়সে চুল পাকার সাথে যৌন দুর্বলতার একটা সম্পর্ক
রয়েছে। যদি আপনার যৌন দুর্বলতার কারণে চুল পেকে যায় সে ক্ষেত্রে হোমিওপ্যাথি
দোকান থেকে Lycopodium এই ওষুধটি কিনে খাবেন।
Jaborandi: এই ওষুধটি চুল পাকা এবং চুল পড়ে যাওয়া রোধ করতে অধিক
কার্যকারী। এই ওষুধটি নারিকেল তেলের সাথে ব্যবহার করতে হয়। এ ওষুধটি ব্যবহারের
ফলে খুব দ্রুত চুল পাকা ও চুল পড়া রোধ হয়। এমনকি আপনার মাথার রক্ত চলাচল
স্বাভাবিক অবস্থায় রাখে। এটি 100ml নারিকেল তেলের সাথে পনেরো ফোঁটা Jaborandi
ওষুধটি মিশ্রিত করে দিনে দুইবার দিতে হবে।
Arnica Montana: মাথার চামড়ায় যদি ব্যথা থাকে এর সাথে চুল পড়ে
যাওয়া ও চুল যদি পাকতে থাকে সেক্ষেত্রে Arnica Montana এই ওষুধটি খুবই
কার্যকর। এটি ব্যবহারের নিয়ম হলো 100ml নারিকেল তেলের সাথে ১০ ফোটা Arnica
Montana মিশ্রিত করে দিনে দুইবার ব্যবহার করব।
Psoralea Corylifolia: ধুলোবালি পড়ার কারণে আমাদের চুলের গোড়ার
যে মেলানিন নষ্ট হয়ে যায় সেটি ঠিক করার জন্যই প্রধানত Psoralea Corylifolia
এই ওষুধটি ব্যবহার করা হয়। এটি ব্যবহারে আপনার চুলের গোড়ার মেলানিন আগের
অবস্থায় ফিরে আসে এবং আপনার চুল পাকা বন্ধ করে দেয়।
আশা করি চুল পাকা বন্ধের ওষুধ হোমিওপ্যাথি যে সকল উপায় আছে সবগুলো আপনাদের
মাঝে তুলে ধরতে পেরেছি। হোমিওপ্যাথি ওষুধ গুলোর নাম এবং খাওয়ার নিয়ম দুটোই
আপনাদের মাঝে উল্লেখ করেছি।
অল্প বয়সে চুল পাকার কারণ:
জেনেটিক সমস্যা: যদি আপনার দাদা-দাদি, নানা-নানি, বাবা-মায়ের অল্প
বয়সে চুল পেকে থাকে তাহলে আপনারা চুল অল্প বয়সেই থেকে যাবে আর এটিকেই বলা হয়
জেনেটিক সমস্যা। জেনেটিক সমস্যায় অল্প বয়সে চুল পাকা হলো প্রধান কারণ। এটি
বংশগতভাবেই সন্তানদের এই রোগটি হয়ে থাকে।
মানসিক চাপ: আপনার যদি মানুষের চাপ থেকে থাকে তাহলেও আপনার অল্প
বয়সে চুল পেকে যেতে পারে। বিশেষ করে যারা ডাক্তার উকিল এইসব ব্যক্তিদের মধ্য
বয়সেই মানসিক চাপের কারণে চুল পেকে যায়। আর অল্প বয়স্ক ছেলে মেয়েরা যারা
পড়াশোনা নিয়ে খুব মানসিক চাপে থাকে তাদের অল্প বয়সেই চুল পেকে যেতে পারে।
মানসিক চাপের জন্য চুল পাকার কারণ কে দ্বিতীয় নাম্বারে রাখা হয়েছে।
পুষ্টিহীনতা: যদি এরকম হয় আপনি যেসব খাবার খান সেসব খাবারে যদি
সুষম পুষ্টি না থাকে সেক্ষেত্রে আপনার চুল পেকে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক গুণ
রয়েছে। আপনি যেসব খাবার খান সেগুলো খাবারে যদি পর্যাপ্ত ভিটামিন বা পুষ্টি না
থাকে যেমন ভিটামিন সি অথবা ভিটামিন ই যদি না থাকে তাহলে আপনার চুল অল্প বয়সে
পেকে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক।
দূষিত আবহাওয়া: যেসব এলাকায় বাতাসের সাথে অনেক ধুলোবালি মিশ্রিত
থাকে সেসব এলাকায় যদি আপনি বসবাস করেন সে ক্ষেত্রে আপনার চুল অল্প বয়সেই পেকে
যেতে পারে। ধুলোবালিযুক্ত বাতাস আপনার চুলের গোড়ায় অনেক ধুলোবালি জমা করে যে
কারণে আপনার চুলের গোড়ার মেলানিন নষ্ট হয়ে যায়। এই মেলানিন নষ্ট হয়ে গেলে
অল্প বয়সেই আমাদের চুল পেকে যায়।
হরমোন জনিত সমস্যা: আমাদের শরীরে অনেক সময় হরমোন জনিত সমস্যার
কারণে বিভিন্নভাবে আমরা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে যায়। আমাদের শরীরে থাকে
বিভিন্ন ধরনের হরমোন। একেক ধরনের হরমোন একেক ধরনের কাজ করে। আমাদের চুলের যে
হরমোন গুলো থাকে সে হরমনের সমস্যা হলে বা কোন ব্যাঘাত ঘটলে আমাদের চুল পেকে
যেতে পারে।
ভিটামিন বি১২ এর অভাব: যদি আমাদের শরীরে ভিটামিন বি১২ এর অভাব দেখা
যায় সে ক্ষেত্রেও আমাদের অল্প বয়সে চুল পেকে যেতে পারে। সেজন্য খেয়াল রাখতে
হবে ভিটামিন বি১২ এর অভাব যেন আমাদের শরীরে দেখা না দেয়।
চুল পাকে কোন ভিটামিনের অভাবে:
আমাদের শরীরে বিভিন্ন ভিটামিনের অভাবে চুল পেকে যায়। প্রথমে আলোচনা করি
ভিটামিন সি নিয়ে। ভিটামিন সি এর অভাবে আমাদের চুল পেকে যেতে পারে। সেজন্য
ভিটামিন সি জাতীয় খাদ্য বিশেষ করে ফলমূল প্রচুর পরিমাণে খেতে হবে।
এর পরে আসে ভিটামিন ই নিয়ে। আপনারা চাইলে ই ক্যাপ নামে একটি ক্যাপসুল বাজারে
পাওয়া যায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই আছে। ই ক্যাপ আপনি চাইলে প্রতিদিন ২০০
মিলিগ্রাম করে দিনে দুই বেলা খেতে পারেন।
এরপরে যেটি নিয়ে কথা বলবো সেটি হলো জিংক। এই জিংক এর অভাবে আপনার চুলের বৃদ্ধি
হওয়া অনেকটা কমে যায়। সেজন্য আপনি লাল মাংস, ডিম, দুধ, পেয়ারা, কালোজাম আরো
অনেক খাবারে পাবেন। এটি সাপ্লিমেন্ট আকারেও বাজারে পাওয়া যায়।
এখন কথা বলব ভিটামিন বি কমপ্লেক্স নিয়ে। ভিটামিন বি কমপ্লেক্স এর অভাবে আপনার
চুল পেকে যেতে পারে। যে কারণে আপনি চেষ্টা করবেন প্রতিদিন কমলা অথবা লেবু খেতে।
আরো দুটি ভিটামিনের নাম বলব সেটি হলো ভিটামিন এ অভিটামিন বি৭। এই দুইটি ভিটামিন
বাজারে সাপ্লিমেন্ট হিসেবে আপনারা পেতে পারেন।
আশা করি চুল পাকা বন্ধের ঔষধ হোমিওপ্যাথি ও চুল পাকে কোন ভিটামিনের অভাবে
সেটি আপনারা ভালোভাবে জানতে পেরেছেন।
লেখক এর শেষ কথা:
আমাদের চুল অল্প বয়সে বেশ কয়েকটা কারণে পেকে যেতে পারে। আমার জানা মতে
প্রায় সবগুলি কারণই নেই আপনাদের মাঝে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। বিশেষ করে চুল
পাকা বন্ধের ঔষধ হোমিওপ্যাথি ও চুল পাকে কোন ভিটামিনের অভাবে প্রায় সব
বিষয়ে আলোচনা করেছি। আমার এই পুরো আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য
ধন্যবাদ। আপনার যদি আরো কোন বিষয় জানার থাকে আপনি আমাদের কমেন্ট করতে পারেন
অথবা আমাদের দেওয়া ইমেইলে ইমেইল পাঠাতে পারেন। পরবর্তী এই একই বিষয়ে অল্প বয়সে চুল পাকার সমাধান নিয়ে আলোচনা করব।